ক্ষমতার সিংহভাগ অংশীদারিত্ব চায় তালেবান: মার্কিন দূত

ক্ষমতার সিংহভাগ অংশীদারিত্ব চায় তালেবান: মার্কিন দূত

আফগানিস্তানে নতুন যেকোনো ধরনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে ক্ষমতার সিংহভাগ অংশ চায় তালেবান। এছাড়া দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা চললেও সেখানে কার্যত কাবুল সরকার ও তালেবানের অবস্থান একে অপর থেকে অনেক দূরে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) এ তথ্য জানান আফগান বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা অনুযায়ী, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাসহ সকল বিদেশি সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার কাজ চলছে। এর মধ্যেই আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী তালেবান গোষ্ঠীর যোদ্ধারা।

সম্প্রতি দেশটির অন্তত তিনটি প্রাদেশিক রাজধানীর দখল পেতে হামলা জোরদার করেছে তালেবান। এই পরিস্থিতিতে আফগান শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বর্ণহীন মূল্যায়ন’ সামনে আনলেন খলিলজাদ।

মঙ্গলবার অ্যাসপেন সিকিউরিটি ফোরামের অনলাইন কনফারেন্সে আফগান বংশোদ্ভূত অভিজ্ঞ মার্কিন কূটনীতিক জালমে খলিলজাদ বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সরকার গঠিত হলে তার সিংহভাগ ক্ষমতা নিজেদের হাতে চায় তালেবান। তারা (তালেবান) এমনটাই দাবি করছে।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, তালেবান ও কাবুল সরকারের মধ্যকার শান্তি আলোচনার অচলাবস্থা নিরসনে মঙ্গলবার আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এই আলোচনায় আরও গতি আনা প্রয়োজন বলে এসময় তারা একমত পোষণ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস এক বিবৃতিতে জানান, আফগানিস্তানে তালেবানের চলমান হামলা এবং এর ফলে সাধারণ মানুষের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন ব্লিংকেন ও আশরাফ গনি।

আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তালেবানের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্র। কাতারের রাজধানী দোহায় স্বাক্ষরিত এই চুক্তির প্রধান কারিগর ছিলেন জালমে খলিলজাদ। পরে এই চুক্তির অধীনেই আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়।

মঙ্গলবার খলিলজাদ বলেন, একটি কার্যকর যুদ্ধবিরতি এবং অংগ্রহণমূলক অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মাধ্যমে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। গনি প্রশাসন চাচ্ছে, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারেই তালেবানকে অন্তর্ভুক্ত করতে।

খলিলজাদ আরও বলেন, তবে তালেবানের কথা হচ্ছে- আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান ও দখলদারিত্বের ফল হিসেবে গনি সরকার গঠিত হয়েছে এবং দেশ শাসন করছে। তাই তারা (তালেবান) একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং সংবিধান চায়।

তিনি বলছেন, তালেবান ও কাবুল সরকার একে অপরের (সঙ্গে ঐকমতে পৌঁছানো) থেকে বহু দূরে। তারা একে অপরের হিসেব উল্টে দিতে চাইছে, ঠিক যেমনটি তারা করছে যুদ্ধক্ষেত্রে।

সূত্র: রয়টার্স

আপনি আরও পড়তে পারেন